October 16, 2025 Diary

স্রোত

আমাদের মধ্যে যারা সরকারি চাকরি প্রত্যাশী, তাদের একটা এক্সপেক্টেশন থাকে সাধারণত- একবার চাকরি পেলে লাইফ সেট। পরিশ্রম কম, বেতন ভালো। যেকারণে চাকরির প্রতিযোগিতায় বিজয়ের জন্য অমানবিক এই পরিশ্রম।

তো কিছুটা আইরনি সত্যি বলতে। ২০ বছর ধরে পড়াশোনা করা, আরো কয়েক বছর ধরে লেগে থাকা। অক্লান্ত পরিশ্রম আর সাধনা করছি- যেন আসল কোন কাজ করতে না হয়। কী নিরর্থক জীবন!

সরকারি চাকরির উদাহরণ দেয়া, কারণ এটা আমরা সবাই রিলেট করতে পারি। আমরা সিমপ্লি নিজেদের মধ্যে বা আমাদের আশেপাশে এটা দেখেছি। তবে এখানে মূল উদ্দেশ্য আমাদের যে মাইন্ডসেট তৈরি হয়ে গেছে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও সেটা খুব ভিন্ন না।

এইচএসসি বা এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিনগুলোতে একটা বিষণ্নতা কাজ করে। একদিকে অনেক জনের জন্য দিনটা আনন্দের হবে, অন্যদিকে অনেকে এই দিনটা আর পরবর্তী কিছু দিনের স্মৃতিগুলো হয়ত যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইবে। আর এর মাঝে হয়ত কিছু খবর সামনে আসবে, যেগুলো কখনো কাঙ্ক্ষিত থাকে না।

বাংলাদেশের পড়াশোনার মধ্যে কনট্রাস্টটা খুব বেশি চোখে পড়ে। একদিকে হয়ত কোন স্কুল প্রায় শতভাগ জিপিএ ৫, অন্যদিকে হয়ত কোন এলাকায় পাশ করা কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। না সবার সমান সুবিধা, না সবাই একাডেমিকে সমান মন রাখে। কিন্তু সবাই একই প্রতিযোগিতায়।

এইচএসসির ফলাফল দিয়েছে। এবার পাশের হার কমেছে। এতে ভালো-মন্দ কিছু দেখছি না। এটা বাদে যে এবার ফলাফলের পর মলিন হয়ে যাওয়া চেহারার সংখ্যা হয়ত বেশি। তবে সত্যি কিছু যায়-আসে না। যে অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আমরা নেমেছি এটার শেষ ফলাফল হতাশা। দেশের সর্বোচ্চ ভার্সিটিগুলো, যেগুলোতে চান্স পাওয়ার জন্য একেকজন স্বপ্নে বিভোর থাকে- সেখানকার ছাত্ররা জানে কতটা হতাশার মধ্যে বছরগুলো পার করতে হয়। গ্রাজুয়েশন শেষে একটা সার্টিফিকেট ধরিয়ে দিবে ঠিকই, কিন্তু কর্মক্ষেত্রের ময়দানে ওরকম সার্টিফিকেট নিয়ে হাজার হাজার জন অপেক্ষায়।

যারা এই স্রোতে ভেসে চলেছি কারো হতাশা আজকে, কারো এডমিশনের সময়, কারো ভার্সিটির মাঝপথে কিংবা চাকরিক্ষেত্রে গিয়ে আর কারো হয়ত জীবনের একটা পর্যায়ে এসে কী নিরর্থক জীবন কেটে গেলো এই আফসোস নিয়ে।

Tags:

Diary